বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত বাংলা ভাষাভাষী সকলের জন্য প্রীতি, শুভেচ্ছা এবং খ্রীষ্টিয় ভালবাসা জানাচ্ছি। এমি বাংলাদেশ ট্রাস্ট মূলত খ্রীষ্টিয়ান মিশন কেন্দ্রিক বাইবেল শিক্ষা কার্যক্রম। বিগত ২১ অক্টোবর ২০১০ খ্রীষ্টাব্দে ৫ জন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীকে নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এখন এই সুসমাচার কেন্দ্রিক বাইবেল শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে আরও অনেকে যুক্ত হয়েছেন।
এমি শব্দটি মূলত ইংরেজি AMI, অর্থাৎ Antioch Missions International কোরিয়া কেন্দ্রিক এক সুসমাচার শিক্ষাদান কর্মকান্ড, যার গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে, সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাসরত বিভিন্ন ভাষা-ভাষী খ্রীষ্টিয়ান জনগোষ্ঠীর কাছে বাইবেলের শিক্ষাকে শুদ্ধভাবে তুলে ধরা, যেন সকলে সত্যিকার বাইবেল শিক্ষাকে সঠিক ও গ্রহণযোগ্য বলে মনে করে। সকল খ্রীষ্টিয়ানেরা যেন তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেল সঠিকভাবে জানতে পারে, বুঝতে পারে এবং এই পৃথিবীতে প্রচলিত সকল প্রকার শিক্ষার সাথে তুলনা করে এবং ভুল শিক্ষাকে বর্জন করে সত্যিকার শিক্ষাকে গ্রহণ করে তাদের জীবনে চলার পথে কাজে লাগাতে পারে। এমি গ্লোবালবাংলা.ওআরজি (amiglobalbangla.org) এরই একটি অংশ হিসাবে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাংলা ভাষা-ভাষীদের কাছে বাইবেল ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
বাইবেলের দ্বিতীয় অংশ পবিত্র নতুন নিয়মে প্রেরিত্ পৌল তার সন্তানতুল্য তীমথিয়কে শিক্ষা ও উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “অনেক সাক্ষীর সামনে আমার মুখে যে সব শিক্ষার কথা তুমি শুনেছ সেই শিক্ষা ধরে রাখবার জন্য তুমি তা এমন সব বিশ্বস্ত লোকদের দাও যাদের অন্যদের শিক্ষা দেবার যোগ্যতা আছে” (২ তীমথিয় ২:২ পদ)।
এই পৃথিবীর বয়স এখন অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের পবিত্র বাইবেলে যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে লেখা হয়েছে, যিনি একমাত্র মশীহ, নাজাৎদাতা ও উদ্ধারকর্তা। তিনি একাধারে নবী, পুরোহিত এবং স্বর্গরাজ্যের রাজা। নবী হিসাবে তিনি অনেক আশ্চর্য কাজ করেছেন এবং অনেক কথা বলেছেন যা আজকের পৃথিবীতেও এক এক করে ঘটে যাচ্ছে। নবী হিসাবে তাঁর বলা কথা, তাঁর বলা ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাচ্ছে। মথির লেখা সুসমাচার ২৪ অধ্যায় পড়তে পড়তে আমরা এটা দেখতে পাই যে, তিনি বলেছেন- ‘তিনি আবার আসবেন’। তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন: “আমাদের বলুন, কখন এইসব হবে এবং কি রকম চিহ্নের দ্বারা বোঝা যাবে আপনার আসবার সময় ও যুগ শেষ হবার সময় হয়েছে?”
যীশু তাদের বলেছিলেন, অনেকেই তোমাদের ঠকাবে, কারণ তারা আমার নাম নিয়ে আসবে, বলবে ‘আমি মশীহ’ ‘আমি ত্রাণকর্তা’, ‘আমি নাজাৎদাতা’। এভাবে তারা অনেককেই ঠকাবে।
তিনি আরও বলেছিলেন, “তোমাদের কানে যুদ্ধের আওয়াজ আসবে আর যুদ্ধের খবরা-খবরও তোমরা শুনতে পাবে” (মথি ২৪:৬ক)। “এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে এবং এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। অনেক জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হবে” (মথি ২৪:৭)।
মশীহ যীশু খ্রীষ্টের ভাষ্য: “এইসব কেবল যন্ত্রণার আরম্ভ।” তারপর, তিনি ১৪ পদে বলেছেন, “সমস্ত জাতির কাছে সাক্ষ্য দেবার জন্য স্বর্গরাজ্যের সুখবর সারা জগতে প্রচার করা হবে এবং তারপরেই শেষ সময় উপস্থিত হবে।”
বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ২৫টিরও বেশী দেশে এমি কলেজ এন্ড সেমিনারী নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে বাইবেলের শিক্ষাকে গ্রহণযোগ্য করে তু্লে ধরা হচ্ছে। এমি কোর্স সমূহ এই সব দেশে তাদের স্ব স্ব ভাষায় পড়ানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও একইভাবে বাংলা ভাষায় এই শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে যেন গ্রাম পর্যায়ে পর্যন্ত এই শিক্ষা সম্প্রসারিত হতে পারে। তাছাড়াও, পশ্চিম বাংলায় বাংলা ভাষাভাষী খ্রীষ্টিয়ানেরাও এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারছে। আমাদের উদ্দেশ্য যেন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা বাংলা জানা সকলেই বাংলাতে আমাদের পাঠ্যক্রম পড়তে পারে।
বিগত ২০১০ খ্রীষ্টাব্দের প্রথম দুটি বছরে আমরা বাংলাদেশে বেশ কটি ক্যাম্পাস গঠন করতে পেরেছি, যার মধ্য দিয়ে গ্রাম পর্যায়ে প্রায় ৪০০ ছাত্র-ছাত্রী আমাদের বাইবেল শিক্ষা গ্রহণ করতে সুযোগ পেয়েছে। ২০১২-১৪ খ্রীষ্টাব্দে মিশন সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের ক্যাম্পাস আরও বেড়েছে এবং ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও যথেষ্ট বেড়েছে। এ ছাড়াও, যারা ইংরেজিতে এমি কোর্স করতে আগ্রহী, তারা ইংরেজি সিডি’র মাধ্যমে এই শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পেতে পারে।
২০১৭ খ্রীষ্টাব্দে এসে আমরা ডাকযোগে বাইবেল পাঠ্যক্রম প্রস্তুত করতে শুরু করি। ২০১৮ খ্রীষ্টাব্দে আগ্রহী বাইবেল অনুরাগীদের কাছে পাঠ্যক্রম পাঠাতে শুরু করি। বর্তমানে, এমি ডাকযোগে বাইবেল পাঠ্যক্রমটি’ নানা বয়সের খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, এমন কি গ্রাম অঞ্চল থেকেও বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
২০১৪-২০১৭ খ্রীষ্টাব্দ সময়কালে আমাদের ক্যাম্পাসগুলো যথেষ্ট বেড়ে গেছে। মূলত, আমাদের প্রথম সেশনের গ্রাজুয়েট মিশনারীরা বেশ অনেকগুলো ক্যাম্পাসে আরও ২০০ ছাত্র-ছাত্রীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বর্তমানে আমাদের ক্যাম্পাস সংখ্যা আরও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, যার সংখ্যা ২২ টি। আমরা এখন এলাকাভিত্তিকভাবে এইসব ক্যাম্পাসগুলোকে মিশন সেন্টার নামে উল্লেখ করে থাকি।
দ্বিতীয়ত, আমরা আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলো অডিও/ভিডিও আকারে ডাবিং করে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছি। যদিও আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলো পুস্তক আকারে করা হয়েছে, কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল যুগে আরও সহজভাবে পৌঁছে দিতে পারলে আরও অনেকেই ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
বিশ্বের যে প্রান্তেই আপনি থাকুন না কেন, আমাদের পাঠ্য বইগুলো আপনিও পড়ে দেখতে পারেন। এছাড়াও অনলাইনে বই পড়ার সুযোগ পেয়ে আপনি ঈশ্বরের বাক্য থেকে জ্ঞান লাভের সুযোগ পাচ্ছেন। এভাবে ঘরে বসেও আপনি বাইবেলের শিক্ষা গ্রহণ করতে সুযোগ নিতে পারছেন।